শনিবার (০৮ ফেব্রুয়ারী ) চট্টগ্রামে বক্তব্য দেন উপদেষ্টা ফারুক ই আজম। ছবি : সংগৃহীত
আরিফ খান শুভ
বিশেষ প্রতিনিধি
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতিক বলেছেন, সামনের বর্ষায় চট্টগ্রামের মানুষ যাতেজলাবদ্ধতা থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি পায় সেই লক্ষ্যে সমন্বিতভাবে কাজ চলছে।
শনিবার (০৮ ফেব্রুয়ারী ) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে সংশ্লিষ্ট দপ্তরেরকর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে তিনি নগরীর আগ্রাবাদবেপারী পাড়ায় নালাই খাল, বহদ্দারহাট বারইপাড়া খাল পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
খাল–নালায় ময়লা আবর্জনা না ফেলতে নগরবাসীকে অনুরোধ জানিয়ে উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বলেন, এবারওনগরবাসী জলাবদ্ধতা থেকে হয়তো পুরোপুরি নিস্কৃতি পাবেনা। তবে দূর্দশা কমানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। চট্টগ্রামেজলাবদ্ধতা নিরসনে দায়িত্বপ্রাপ্ত চার উপদেষ্টা এবং স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করছে। যাতেআগামী বর্ষায় চট্টগ্রামের জনগণ যেন এটার সুফল পায়।
এটার পরিপূর্ণ সুফল হয়তো পাবে না। কিন্তু কাজ যখন শুরু হয়েছে, ধারাবাহিকতায় এই জলাবদ্ধতা নিরসন হবে বলে আমিআশাবাদী। বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে ফারুক ই আজম বলেন, সরকারের প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকা বাজেটঘাটতি রয়েছে। এটা নানান দিক থেকে বিভিন্নভাবে আমাদের ম্যানেজ করতে হচ্ছে। বাজেট স্বল্পতা থাকলেও চট্টগ্রামেরজলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান প্রকল্প সরকারের অগ্রাধিকার। তাই প্রতি সপ্তাহে উপদেষ্টা পরিষদের কোনো না কোনো একজনচট্টগ্রাম আসবেন জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি দেখতে।
আপনাদের কাজের ফিরিস্তি নেয়ার জন্য নয়, আমরা যাতে সীমাবদ্ধতা গুলোকে চিহ্নিত করতে পারি। সেগুলো যেন দ্রুতসময়ে সমাধান করতে পারি, সেইজন্য আসা। এইধারা অব্যাহত থাকলে ধীরে ধীরে আমরা জনসম্পৃক্ততা ও সফলতা পাব।
ভোগান্তি কমাতে প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহকে সমন্বয় করে কাজ করার নির্দেশ দিয়ে উপদেষ্টা ফারুক–ই–আজমবলেন, যত্রতত্র আবর্জনা না ফেলতে নগরবাসীকে সচেতন করতে হবে। কিন্তু এরপরও সচেতন না হলে পরবর্তীতে জরিমানাও শাস্তি দেয়া যায় কিনা সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতর গুলোকে ভেবে দেখতে হবে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অনেক ধরণের কাজ করতে পারে জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টাবলেন, প্রথমে সচেতনতা, তারপর সতর্কতা, এরপর পানিশমেন্ট। এইভাবে যদি আমরা এগিয়ে যাই আশাকরি উল্লেখযোগ্যঅগ্রগতি পেতে পারি। নগরে বসবাসকারী যে সমস্ত পরিবার শতভাগ কম্পøায়েন্স মেনে চলবে তাদের পুরস্কৃত করতে পারে।এগুলো যারা মান্য করবে না তাদেরকে তিরস্কার এবং জরিমানা করা যায়। যারা কোনভাবেই মানবে না তাদের দুয়েক জনকেজেলও দিতে পারি। তাহলে ময়লা যত্রতত্র ফেলবে না।
চট্টগ্রাম শহরের রাস্তাঘাটে আগে যেরকম ময়লা আবর্জনা ছিল সেটার অনেকটা উন্নতি হয়েছে জানিয়ে ফারুক ই আজমবলেন, এখন অনেকটা পরিচ্ছন্ন দেখা যাচ্ছে। এটা ক্রমান্বয়ে পরিচ্ছন্ন শহরে পরিণত হবে। চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনেসকল সেবাদানকারী প্রতিষ্টানের যে সমন্বয়ের সৃষ্টি হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতা যাতে কোনভাবেই ক্ষুন্ন না হয় সেদিকে সবাইকেদায়িত্বশীল হতে হবে।
মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, বিভাগীয় কমিশনার ড. জিয়াউদ্দীন, জেলাপ্রশাসক ফরিদা খানম, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ওচট্টগ্রাম ওয়াসার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার পাশা, সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী তৌহিদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়াসহ সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারাউপস্থিত ছিলেন।